আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 29, আল আনকাবুত - Aajan.com

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 29, আল আনকাবুত



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৬৯, রুকু সংখ্যা: ০৭

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-১৩ঈমানের পরীক্ষা অনিবার্য। শিরক ও কুফুরির পক্ষে পিতা মাতার আদেশ মানা যাবেনা। মানুষের অত্যাচার আর আল্লাহর আযাব এক নয়। কাফিররা তাদের অনুসারীদের পাপের আযাব থেকে মুক্ত করতে পারবেনা।
১৪-৪৪নূহ, ইবরাহিম, লুত, শুয়াইব ও মূসা আ. কর্তৃক তাদের জাতিসমূহকে সংশোধনের দাওয়াত; কিন্তু তাদের জাতিসমূহের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান এবং তাদের ধ্বংসের ইতিহাস। মানুষ আল্লাহকে ছাড়া যাদেরকে অলি বা ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করে তারা মাকড়সার ঘরের মতোই দুর্বল।
৪৫-৬৯আল্লাহর কিতাবের অনুসরণ এবং সালাত কায়েমের নির্দেশ। মুসলিম এবং আহলে কিতাবরা একই ইলাহকে মানে। কুরআনের ব্যাপারে বিভিন্ন অভিযোগের জবাব। হিজরতের অনুমতি, তাওহীদের যুক্তি।
29-1 : আলিফ লাম মিম।
29-2 : মানুষ কি ধারণা করে নিয়েছে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ একথা বললেই তাদের ছেড়ে দেয়া হবে, আর তাদের পরীক্ষা করা হবেনা?
29-3 : আমরা তাদের আগেকার লোকদেরও পরীক্ষা করেছি। আল্লাহ অবশ্য অবশ্যি (পরীক্ষার মাধ্যমে বাস্তবে) জেনে নেবেন তাদেরকে, যারা (ঈমানের দাবিতে) সত্যবাদী, এবং জেনে নেবেন তাদেরকে, যারা (ঈমানের দাবিতে) মিথ্যাবাদী।
29-4 : যারা মন্দ কর্মে লিপ্ত তারা কি ধারণা করেছে যে, তারা আমাদের অতিক্রম করে চলে যাবে? তাদের সিদ্ধান্ত কতো যে নিকৃষ্ট!
29-5 : যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাত কামনা করে, (সে জেনে রাখুক) সাক্ষাতের সেই নির্ধারিত সময়টি অবশ্যি আসবে। তিনি সবকিছু শুনেন, সবকিছু জানেন।
29-6 : যে জিহাদ করে, সে তো নিজের জন্যেই জিহাদ করে। আল্লাহ জগতবাসী থেকে মুখাপেক্ষাহীন।
29-7 : যারা ঈমান এনেছে এবং আমলে সালেহ করেছে, আমরা অবশ্যি তাদের থেকে মুছে দেবো তাদের সব মন্দকর্ম এবং তাদের প্রতিদান দেবো তাদের সর্বোত্তম আমলের ভিত্তিতে।
29-8 : আমরা অসিয়ত (নির্দেশ) করেছি মানুষকে তার পিতা - মাতার সাথে সর্বোত্তম আচরণ করতে এবং (একথাও বলে দিয়েছি) তারা যদি আল্লাহর সাথে এমন কিছু বা কাউকেও শরিক করতে তোমার উপর চাপ প্রয়োগ করে, যার আল্লাহর শরিক হবার ব্যাপারে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তবে (সেক্ষেত্রে) তুমি তাদের আনুগত্য করোনা। কারণ আমার কাছেই তোমাদের ফিরে আসতে হবে, তখন আমি তোমাদের সংবাদ দেবো তোমরা কী আমল করেছিলে?
29-9 : আর যারা ঈমান আনে এবং আমলে সালেহ করে, আমরা অবশ্যি তাদের অন্তরভুক্ত করবো পুণ্যবানদের।
29-10 : মানুষের মধ্যে কিছু লোক বলে: ‘আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি।’ কিন্তু আল্লাহর কাজ করার কারণে তাদেরকে যখন কষ্ট দেয়া হয়, তখন মানুষের ফিতনাকে (নির্যাতনকে) তারা আল্লাহর আযাবের মতো গণ্য করে। তবে যখনই তোমার প্রভুর সাহায্য আসবে, তখনই তারা বলবে: ‘আমরা তো আপনাদের সাথেই ছিলাম।’ নিজের সৃষ্টি জগতের অন্তরে কী আছে তা কি আল্লাহ অবগত নন?
29-11 : আল্লাহ অবশ্যি প্রকাশ করবেন তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে এবং অবশ্যি প্রকাশ করবেন মুনাফিকদের।
29-12 : কাফিররা ঈমানদারদের বলে: ‘তোমরা আমাদের পথ অনুসরণ করো, আমরা তোমাদের পাপ বহন করবো।’ অথচ তারা তাদের পাপ কিছুমাত্র বহন করবেনা। তারা অবশ্যি মিথ্যাবাদী।
29-13 : তারা নিজেদের বোঝা (loads) তো বহন করবেই, সেই সাথে বহন করবে আরো (loads) বোঝা। কিয়ামতের দিন তাদের (এসব) মিথ্যা রচনার ব্যাপারে অবশ্যি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
29-14 : আমরা নূহকে পাঠিয়েছিলাম তার কওমের কাছে। সে তাদের মধ্যে অবস্থান করেছিল পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর। অবশেষে তাদের পাকড়াও করে তুফান (প্লাবন), কারণ তারা ছিলো যালিম।
29-15 : তারপর আমরা নাজাত দিয়েছিলাম তাকে (নূহকে) এবং নৌযানে আরোহীদেরকে আর এ ঘটনাকে করে দিয়েছি জগতবাসীর জন্যে একটি নিদর্শন।
29-16 : স্মরণ করো ইবরাহিমের কথা, সে তার কওমকে বলেছিল: ‘‘তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁকে ভয় করো, এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যদি তোমরা জ্ঞান রাখো।
29-17 : তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে উপাসনা করছো মূর্তি - ভাস্কর্যের, আর রচনা করছো মিথ্যা। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদত করছো, তারা তোমাদের রিযিক দেয়ার মালিক নয়। সুতরাং তোমরা রিযিক চাও আল্লাহর কাছে, এবং তাঁরই ইবাদত করো আর তাঁরই প্রতি শোকরিয়া আদায় করো। কারণ, তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে।
29-18 : তোমরা যদি (রসূলকে) প্রত্যাখ্যান করো, তবে তোমাদের আগেও বহু জাতি প্রত্যাখ্যান করেছিল। স্পষ্টভাবে বার্তা পৌঁছে দেয়া ছাড়া রসূলের আর কোনো দায়িত্ব নেই।’’
29-19 : তারা কি চিন্তা করে দেখেনা, আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন, তারপর পুনরায় সৃষ্টি করেন? একাজ আল্লাহর জন্যে একেবারেই সহজ।
29-20 : হে নবী! বলো: ‘তোমরা জমিনে ভ্রমণ করে দেখো, আল্লাহ কী প্রক্রিয়ায় সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর সৃষ্টি করেন পরবর্তী সৃষ্টি? নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’
29-21 : তিনি যাকে ইচ্ছা করেন আযাব দেন এবং যাকে ইচ্ছা করেন রহম করেন এবং তাঁর কাছেই হবে তোমাদের প্রত্যাবর্তন।
29-22 : তোমরা পৃথিবীতেও পালাতে পারবেনা, আসমানেও নয়। আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোনো অলিও নেই, সাহায্যকারীও নেই।
29-23 : যারা আল্লাহর আয়াতকে এবং তাঁর সাথে সাক্ষাত হওয়াকে অস্বীকার করে, তারাই হয় আমার রহমত থেকে নিরাশ, আর তাদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।
29-24 : তার (ইবরাহিমের) কওমের জওয়াব একটাই ছিলো, তারা বলেছিল: ‘তাকে (ইবরাহিমকে) হত্যা করো অথবা আগুনে পোড়াও।’ কিন্তু আল্লাহ তাকে আগুনে দগ্ধ হওয়া থেকে রক্ষা করেন। এতে রয়েছে নিদর্শন বিশ্বাসী লোকদের জন্যে।
29-25 : ইবরাহিম বলেছিল: ‘তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে ভাস্কর্যদের উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছো দুনিয়ার জীবনে তোমাদের পারস্পারিক বন্ধুত্বের খাতিরে। কিন্তু কিয়ামতের দিন এই তোমরাই পরস্পরকে অস্বীকার করবে এবং পরস্পরকে লা’নত দেবে। তোমাদের আবাস হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোনো সাহায্যকারী হবেনা।’
29-26 : তখন লুত তার প্রতি ঈমান আনে। ইবরাহিম বলেছিল: ‘আমি আমার প্রভুর উদ্দেশ্যে হিজরত করছি, নিশ্চয়ই তিনি মহাশক্তিধর, প্রজ্ঞাবান।’
29-27 : আমরা তাকে দান করেছিলাম (পুত্র) ইসহাক এবং (নাতি) ইয়াকুবকে। আমরা তার বংশধরদের মধ্যে দিয়েছি নবুয়্যত আর কিতাব। এছাড়া আমরা তাকে তার পুরস্কার দান করেছি দুনিয়ায়, আর আখিরাতে। অবশ্যি সে অন্তরভুক্ত হবে পুণ্যবানদের।
29-28 : স্মরণ করো লুতের কথা, সে তার কওমকে বলেছিল: ‘তোমরা এমন ফাহেশা কাজ করছো, যা তোমাদের আগে জগতের কেউ করেনি।’
29-29 : ‘তোমরা কি পুরুষের সাথে যৌন মিলন করে যাবে? জনপথে ডাকাতি করে যাবে? আর জনসম্মুখে অসৎকাজ করতে থাকবে?’ এর জওয়াবে তার কওম একথাই বলেছিল: ‘তুমি যদি সত্যবাদী হয়ে থাকো, তবে আমাদের প্রতি আল্লাহর আযাব এনে দেখাও।’
29-30 : তখন লুত বলেছিল: ‘হে আমার প্রভু! ফাসাদ সৃষ্টিকারী লোকদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করো।’
29-31 : আমাদের দূতরা (ফেরেশতারা) যখন ইবরাহিমের কাছে এসেছিল সুসংবাদ নিয়ে, তখন তারা বলেছিল: ‘এই জনপদবাসীকে আমরা ধ্বংস করে দেবো, এর অধিবাসিরা যালিম।’
29-32 : ইবরাহিম বললো: ‘সেখানে তো লুতও রয়েছে।’ তারা বললো: ‘সেখানে কারা আছে আমরা ভালো করেই জানি। আমরা লুতকে এবং তার পরিবার পরিজনকে রক্ষা করবো, তবে তার স্ত্রীকে নয়। সে পেছনে পড়াদের অন্তরভুক্ত হয়ে যাবে।’
29-33 : আমাদের দূতরা যখন লুতের কাছে এসে পৌঁছালো, তাদের দেখে সে বিষণ্ণ হয়ে পড়লো এবং নিজেকে তাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করলো। তারা বললো: ‘‘আপনি ভয়ও পাবেননা, চিন্তিতও হবেননা। আমরা রক্ষা করবো আপনাকে এবং আপনার পরিবারবর্গকে আপনার স্ত্রীকে বাদে। আপনার স্ত্রী পেছনে পড়াদের অন্তরভুক্ত হবে।
29-34 : আমরা এই জনপদবাসীর উপর আসমান থেকে আযাব নাযিল করবো তাদের পাপাচারের কারণে।’’
29-35 : যারা বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে চলে আমরা এ ঘটনার মধ্যে তাদের জন্যে রেখে দিয়েছি একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন।
29-36 : আমরা মাদায়েনে পাঠিয়েছিলাম তাদের ভাই শুয়াইবকে। সে তাদের বলেছিল: ‘হে আমার কওম! তোমরা এক আল্লাহর দাসত্ব করো এবং শেষ দিনকে ভয় করো, আর পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়িয়োনা।’
29-37 : কিন্তু তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করে। ফলে তাদেরকে আঘাত করে ভূমিকম্প, আর তারা পড়ে থাকে নিজেদের ঘরে উপুড় হয়ে।
29-38 : আর আমরা আদ এবং সামুদ জাতিকেও ধ্বংস করে দিয়েছিলাম। তাদের (বিরান) বাড়িঘরই তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান তাদের মন্দ কর্মকান্ড তাদের কাছে চাকচিক্যময় করে রেখেছিল। ফলে সে তাদেরকে সঠিক পথে আসতে বাধা সৃষ্টি করে, তারা খুব চালাক এবং বিচক্ষণও ছিলো।
29-39 : কারূণ, ফেরাউন ও হামান, এদের কাছে এসেছিল মূসা সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলি নিয়ে। তখন তারা দেশে হঠকারী শাসন চালাচ্ছিল। কিন্তু তারা (আমার শাস্তিকে) অতিক্রম করতে পারেনি।
29-40 : এদের প্রত্যেককেই আমরা তাদের অপরাধের জন্যে শাস্তি দিয়েছি। তাদের কারো প্রতি আমরা পাঠিয়েছি পাথর বৃষ্টি, কাউকেও আঘাত করেছে প্রকান্ড শব্দ, কাউকেও দাবিয়ে দিয়েছিলাম ভূ - গর্ভে, কাউকেও ডুবিয়ে দিয়েছিলাম সমুদ্রে। আল্লাহ তাদের প্রতি যুলুম করেননি, তারা নিজেরাই যুলুম করেছিল নিজেদের প্রতি।
29-41 : যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যদেরকে অলি হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের দৃষ্টান্ত হলো মাকড়সার দৃষ্টান্ত, সে নিজের জন্যে ঘর বানায়, আর ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই সবচাইতে দুর্বল, যদি তারা জ্ঞান রাখতো!
29-42 : তারা আল্লাহর পরিবর্তে যা কিছুকেই ডাকে, আল্লাহ তা জানেন। তিনি মহাশক্তিধর, মহাবিজ্ঞানী।
29-43 : আমরা মানুষের জন্যে দিয়ে থাকি এসব দৃষ্টান্ত, কিন্তু জ্ঞানীরা ছাড়া কেউ তা বুঝেনা।
29-44 : আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন মহাকাশ এবং এই পৃথিবী বাস্তবতার ভিত্তিতে। অবশ্যি এতে রয়েছে একটি নিদর্শন মুমিনদের জন্যে।
29-45 : তিলাওয়াত করো কিতাব যা তোমার প্রতি অহি করা হয়েছে এবং কায়েম করো সালাত। নিশ্চয়ই সালাত বিরত রাখে ফাহেশা এবং মুনকার (মন্দকর্ম) থেকে। আল্লাহর যিকিরই সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ্ জানেন তোমরা যা করো।
29-46 : সৌজন্যমূলক ও যুক্তিসংগত পন্থা ছাড়া আহলে কিতাবের সাথে বিতর্ক করোনা, তবে তাদের মধ্যে যারা যুলুম করে তাদের কথা ভিন্ন। তোমরা তাদের বলো: ‘আমরা ঈমান এনেছি সেই কিতাবের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে তোমাদের প্রতি, আর আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ একই ইলাহ, আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী।’
29-47 : এভাবেই আমরা নাযিল করেছি তোমার প্রতি এই কিতাব। যাদের আমরা কিতাব দিয়েছি তারা এটির প্রতি ঈমান রাখে এবং এখনকার এদের (আহলে কিতাবের) কেউ কেউও এটির প্রতি ঈমান রাখে। কাফিররা ছাড়া আর কেউই আমাদের আয়াত অস্বীকার করেনা।
29-48 : তুমি তো এর আগে কোনো কিতাব তিলাওয়াত করতেনা এবং নিজ হাতে কোনো কিতাব লিখতেও না, তেমনটি হলে হয়তো মিথ্যাবাদীরা সন্দেহ পোষণ করতে পারতো।
29-49 : বরং যাদের এলেম দেয়া হয়েছে তাদের অন্তরে এটি একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন। যালিমরা ছাড়া আর কেউই আমাদের আয়াত অস্বীকার করেনা।
29-50 : তারা বলে: ‘তার প্রভুর নিকট থেকে তার কাছে কোনো নিদর্শন আসেনা কেন?’ তুমি বলো: ‘নিদর্শন পাঠানোর বিষয়টা তো আল্লাহর এখতিয়ারে। আমি তো কেবল একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী ছাড়া আর কিছু নই।’
29-51 : তাদের জন্যে এটা কি যথেষ্ট নয় যে, আমরা তোমার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদের প্রতি তিলাওয়াত করা হয়। নিশ্চয়ই এতে রয়েছে রহমত ও উপদেশ সেইসব লোকদের জন্যে যারা ঈমান রাখে।
29-52 : তুমি বলো: ‘আমার ও তোমাদের মাঝে শহীদ (সাক্ষী) হিসেবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। তিনি জানেন মহাকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে। যারা বাতিলের প্রতি ঈমান রাখে এবং কুফুরি করে আল্লাহর প্রতি, তারাই আসল ক্ষতিগ্রস্ত।’
29-53 : তারা তোমার কাছে আহবান জানায় দ্রুত আযাব এনে দিতে। যদি সময় নির্ধারিত না থাকতো, তাহলে অবশ্যি তাদের উপর আযাব এসে যেতো। আযাব অবশ্যি তাদের উপর আসবে আকস্মিকভাবে এবং তারা টেরও পাবেনা।
29-54 : তারা তোমাকে দ্রুত আযাব এনে দিতে বলে। জাহান্নাম অবশ্যি কাফিরদের পরিবেষ্টন করবে।
29-55 : সেদিন তাদের উপর থেকে এবং তাদের পায়ের নিচে থেকে আযাব এসে তাদের ঢেকে ফেলবে এবং তিনি বলবেন: তোমরা যেসব আমল করতে তার স্বাদ গ্রহণ করো।
29-56 : হে আমার সেইসব বান্দারা যারা ঈমান এনেছো! আমার পৃথিবী অনেক প্রশস্ত, সুতরাং তোমরা কেবল আমারই ইবাদত করো।
29-57 : প্রত্যেক ব্যক্তিই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। তারপর আমাদের কাছেই তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে।
29-58 : আর যারা ঈমান আনবে এবং আমলে সালেহ্ করবে আমরা অবশ্যি তাদের বসবাসের জন্যে জান্নাতে উঁচু প্রাসাদ দান করবো। সেসবের নিচে দিয়ে বহমান থাকবে নদ নদী নহর। চিরদিন থাকবে তারা সেখানে। কতো যে উত্তম প্রতিদান নেক আমলকারীদের জন্যে,
29-59 : যারা সবর অবলম্বন করে এবং তাওয়াক্কুল করে তাদের প্রভুর উপর!
29-60 : এমন অনেক জীব - জানোয়ার আছে যারা নিজেদের রিযিক মওজুদ করে রাখেনা, আল্লাহ্ই তাদের রিযিক দেন এবং তোমাদেরকেও। তিনি সব শুনেন, সব জানেন।
29-61 : তুমি যদি তাদের জিজ্ঞেস করো: ‘আসমান জমিন কে সৃষ্টি করেছে এবং কে নিয়ন্ত্রণ করছে সূর্য আর চাঁদ?’ তারা অবশ্যি বলবে: ‘আল্লাহ্।’ তাহলে তারা কোথা থেকে প্রতারিত হচ্ছে?
29-62 : আল্লাহ্ই বৃদ্ধি করে দেন রিযিক যাকে চান এবং নিয়ন্ত্রণ করে দেন যাকে চান। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রতিটি বিষয়ে অবগত।
29-63 : তুমি যদি তাদের জিজ্ঞেস করো, কে নাযিল করেন আসমান থেকে পানি, তারপর তা দিয়ে জীবিত করেন জমিনকে তা মরে (শুকিয়ে) যাবার পর? অবশ্যি তারা বলবে: ‘আল্লাহ্।’ বলো: ‘আলহামদু লিল্লাহ!’ বরং তাদের অধিকাংশই আকল - বুদ্ধি রাখেনা।
29-64 : এই দুনিয়ার জীবনটা খেলতামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। আখিরাতের জীবনই চিরন্তন জীবন, যদি তারা জানতো!
29-65 : তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে, তখন আন্তরিক নিষ্ঠার সাথে তারা আল্লাহকে ডাকে, তারপর যখন তিনি তাদেরকে নাজাত দিয়ে কূলে নিয়ে আসেন, তখন তারা শিরক করতে থাকে,
29-66 : যাতে তাদের প্রতি আমার দান তারা অস্বীকার করে এবং ভোগবিলাসে লিপ্ত থাকে। অচিরেই তারা জানতে পারবে (এর পরিনতি)।
29-67 : তারা কি দেখেনা, আমরা হারাম (শরিফকে) নিরাপদ স্থান বানিয়ে দিয়েছি, অথচ তার চারপাশে যারা আছে তাদের উপর হামলা করা হয়? তারা কি বাতিলের প্রতি ঈমান রাখে, আর কুফুরি করে আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি?
29-68 : ঐ ব্যক্তির চাইতে বড় যালিম আর কে, যে মিথ্যা রচনা করে আল্লাহর উপর আরোপ করে, কিংবা সত্য আসার পর তা প্রত্যাখ্যান করে? কাফিরদের আবাস কি জাহান্নাম নয়?
29-69 : যারা আমাদের জন্যে (উদ্দেশ্যে) জিহাদ করে, আমরা অবশ্যি তাদের পরিচালিত করি আমাদের পথে, আর অবশ্যি আল্লাহ্ কল্যাণপরায়ণদের সাথে থাকেন।